বইমেলা ডায়েরীঃ ১৭/০২/২০১২ ও ১৮/০২/২০১২ (পারভার্টের জন্য শুভকামনা)

শব্দপুঞ্জ (ফয়সল কাদের চৌধুরী) ফোন করে আমাকে জানালো ১৭ তারিখে বইমেলাতে পারভার্ট আসছে। ঠিক করলাম ১৭ তারিখ সকালেই ঢাকাতে চলে আসবো। আগেরদিন রাতে জ ই মানিক চলে এলো আমাদের হাসপাতালে। সারারাত আমরা কার্ড খেলে সময় কাটালাম, সকালে বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।

ঢাকায় এসে কিছু ব্যক্তিগত কাজে কখন যে সাড়ে চারটা বেজে গেলো খেয়ালই করেনি। পড়িমড়ি করে বইমেলার দিকে দৌড়ালাম। যখন শাহবাগে এসেছি, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি পারভার্টের মোড়ক উন্মোচন হতে আরো পনের মিনিট বাকী, হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। যাক, এবার আর উন্মোচন পর্ব মিস হবে না!

এমন সময়ই নাজমুল ভাইয়া ফোন দিলেন, আমি শাহবাগে এসেছি শুনে হতাশ হয়ে বললেন, “তারমানে, সন্ধ্যার আগে তোমার সাথে দেখা হবে না!” আমি খুব অবাক হলাম। টিএসসিতে এসে বুঝতে পারলাম ব্যাপারটা। বিশাল লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে নিয়ম মেনে (অনেককেই দেখলাম, লাইনে না দাঁড়িয়ে কীভাবে যেনো মেলায় ঢুকে যাচ্ছে!) যখন মেলায় ঢুকলাম, তখন আক্ষরিক অর্থেই সন্ধ্যা। ফোনে শাওন ভাইয়ের মিস কল দেখে তাকেই ফোন দিলাম। তার কথামতো নজরুল মঞ্চের ডান পাশে গিয়ে দেখি মিষ্টি খাওয়ার ধুম! আকাশগঙ্গা আর জ ই মানিক দেদারসে মিষ্টি বিলাচ্ছে। শেষ হয়ে যাবে সেই ভয়ে লেখককে অভিনন্দন না জানিয়েই সবার আগে আমি দুইটি মিষ্টি পেটে চালান দিয়ে দিলাম!

আবার সবার সাথে দেখা। আবার জমজমাট আড্ডা। আসে নি কে! একুয়া, মেঘ অদিতি আপু, ভেবে ভেবে বলি, ঈশান ভাইয়া, সাহাদাত উদরাজী ভাইয়া, নাজমুল ভাইয়া, আকাশগঙ্গা, আহমাদ আব্দুল হালিম, শাওন ভাইয়া, অজানা পথিক, জ ই মানিকসহ আরো অনেকে। সবচেয়ে বেশি ছিলো শব্দপুঞ্জের ছাত্র- ছাত্রীরা। এতোজনের ভীড়ের জন্যেই বোধহয় মহাদেব সাহা কর্তৃক “পারভার্ট”-এর মোড়ক উন্মোচন আবারো একটুর জন্য মিস করায় কারো কাছ থেকে কোনো খোঁচামূলক কথা শুনতে হয় নি!

শব্দপুঞ্জ যখন শৈলী প্রকাশনীর সামনে দাঁড়িয়ে বইয়ে অটোগ্রাফ দিচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ে সুরঞ্জনা আপু ফোন দিলেন। এবারের মেলায় এখন পর্যন্ত উনাকেই সবচেয়ে বেশি মিস করছি। আমরা চুরুটপ্রেমী কয়েকজন একটু সরে এসে লিটলম্যাগ চত্বরে এসে দাঁড়ালাম।

এখানেও অনেকের সাথে দেখা হয়ে গেলো। চারু মান্নান, অংক (সামুতে কুহক), রেজওয়ান তানিম, শব্দনীড়ের জাকির ভাইয়া, জামান আরশাদ ভাইয়া, ফকির ভাইয়া, জিয়া ভাইয়া, আনন্দময়ী আপুসহ অনেককেই পেয়ে গেলাম। জামান আরশাদ ভাইয়া আমাদের চা এবং টা স্পন্সর করলেন। একটু পরেই সেখানে ব্লগারস ফোরামের তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হলো- নীড় গল্পগুচ্ছ, নীড় পদাবলী আর অন্তরগৃহ। নীড় পদাবলীটা কিনে নিলাম (আশাকরি এবার ডাঃ দাউদ ভাইয়া, আপনার মনোকষ্টটা দূর হবে!)।

কোথা থেকে যেনো এসে হাজির হলো নয়ন, রেজওয়ান তানিম ভাই, বাবুল হোসাইন ভাই আর ফেরদৌস হাসান ভাই। হাসান মাহবুব ভাইকে দেখলাম তিনি একটা জটলার মধ্যমনি হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। গিয়ে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। একটু পরেই দেখলাম কবির য়াহমদ ভাইয়াকে, উনাকে বললাম, “আপনার বই কবে মেলায় আসছে?” উনি অবাক হয়ে পরিচয় দিচ্ছেন, “আমি কবির!” বুঝতে পারলাম উনার শর্ট টার্ম মেমোরি লস আছে! নাহলে এক সপ্তাহ আগে যার সাথে পরিচয় হলো, ফুসকা চটপটি সিগারেট একসাথে খাওয়া হলো, তাকে চিনতেই পারলো না! এবার মেলাতে অবশ্য অনেকেরই শর্ট টার্ম মেমোরি লসের মতো অবস্থা দেখতে পারছি!

ইরিডেনাসের প্রথম সংখ্যা কিনে যখন অন্বেষা স্টলে গেলাম নষ্টালজিক ভাইয়ার “আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে” কিনতে গেলাম, শুনলাম শেষ হয়ে গেছে। পথে ভাইয়ার সাথে দেখা হলে, উনি বললেন আগামীদিন ব্যবস্থা করে দিবেন।

আমরা প্রায় সবাই মেলা থেকে বের হয়ে চা আড্ডা দিলাম, দীর্ঘ আড্ডা। কখন যে রাত প্রায় নয়টা বেজে গেছে টেরই পাই নি। আড্ডা ছেড়ে আসতে খুব কষ্টই লাগছিলো।
আজ শব্দপুঞ্জের আমার বাসায় এসে আমাকে নিয়ে মেলাতে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু ও এসেছেই অনেক দেরী করে, আর আমরা মেলায় পৌছেঁচি রাত আটটা পনের মিনিটে। মেলায় ঢুকেই কোনদিকে না তাকিয়ে প্রথমেই আদর্শ প্রকাশনীতে গিয়ে কিনলাম হাসান মাহবুবের “প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত” এবং অন্বেষা থেকে নষ্টালজিক ভাইয়ার “আজ তোমার মন খারাপ মেয়ে”। একটু পরেই নষ্টালজিক ভাইয়াকে পেয়ে গেলে তার অটোগ্রাফ নিলাম।

এরপর ঐতিহ্যতে গিয়ে আমার পছন্দের বিষয়ের দুইটি বই কিনে যখন লিটলম্যাগের দিকে এগোলাম, ততক্ষণে সাড়ে আটটা। শব্দপুঞ্জ ইতোমধ্যে আব্দুর রাজ্জাক শিপন ভাইয়ার বইটা “সোনামূখী সুইয়ে রুপোলি সুতো” এবং “চতুর্মাত্রিক ব্লগ সংকলন” নিয়েছে। আমরা দুইজন একসাথে গল্প করতে করতে মেলা থেকে বেরিয়ে এলাম। শেষ হলো আমার এই সপ্তাহের মেলা ভ্রমন। হয়তো আবার শেষ সপ্তাহে প্রাণের মেলায় আসবো, সে পর্যন্ত আল বিদা।

বইমেলা ডায়েরীঃ ১০/০২/২০১২ ও ১১/০২/২০১২ (মোড়ক উন্মোচন মিস!)

১০ তারিখ সকাল থেকেই আমি প্রস্তুত ঢাকায় আসার জন্য। আবদুর রাজ্জাক শিপন ভাইয়ার “সোনামুখী সুঁইয়ে রুপোলী সুতো” র মোড়ক উন্মোচন হবে বিকেল পাঁচটায় আর ১১ তারিখে হবে “চতুর্মাত্রিক” ব্লগ সংকলনের। তাই ঢাকায় আসার জন্য এতো অস্থির হয়ে ছিলাম।

বিধাতা অলক্ষ্যে মুচকি হাসছিলেন বোধহয়। হাসপাতাল থেকে বের হবার সময়ই এক রোগী আসলো – ২৮ বছরের সদ্য বিবাহিত যুবক। বাথরুমে পড়ে গিয়ে মাথায় রক্তক্ষরণ। আটকে গেলাম আমি, আর ভাবতে লাগলাম কেনো যে ডাক্তার হলাম! আবার গর্বও হতে লাগলো, ডাক্তার বলেইতো রোগীকে অন্য কাজের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

১০ তারিখ সকালটা শুরু হয়েছিলো অবশ্য খুব ভালো একটা সুখবর দিয়ে। অন্যপ্রকাশ থেকে কমল ভাইয়া ফোন করে বললো, “সরলরেখা – বক্ররেখা” শেষ হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে হুমায়ূন আহমেদের বই নিয়ে প্রেস ব্যস্ত থাকায় এখনই ২য় মুদ্রণ বের করতে পারছে না। আমাদের কাছে যে কপিগুলো আছে সেখান থেকে কিছু বই যেনো ধার দেই! দিয়ে দিলাম কিছু বই ধার, আশা করছি ফেব্রুয়ারির ৩য় সপ্তাহে অন্যপ্রকাশ সুযোগ পাবে ২য় মুদ্রণের।

হাসপাতাল থেকে শেষ পর্যন্ত ২ টার সময় বের হলাম। সয়দাবাদ থেকে তিনটায় ট্রেনে উঠলাম। শুনতে পেলাম এই ট্রেনেই আইনমন্ত্রী ঢাকা থেকে পঞ্চগড়ে যাবে, তাই ট্রেন কোনো জায়গাতেই খুব একটা দেরী করছিলো না। তবুও পাঁচটার মধ্যে ঢাকায় পৌঁছার আশা ছেড়েই দিলাম। এমন সময় আবদুল করিম ফোন করে বললো মোড়ক উন্মোচন হবে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। আমি এয়ারপোর্টে এলাম ছয়টায়, সেখান থেকে আমার বাসায় যেতে যেতে সাতটা, বাসা থেকে মেলায় সাড়ে সাতটায়। গিয়ে দেখি ভাঙ্গা হাট!

নাজমুল ভাইয়া, সাহাদাত উদরাজী ভাইয়া আর ঈশান ভাইয়ার সাথে দেখা হলো। রকমারি.কমের সামনে করিমের সাথেও দেখা হলো। সেখান থেকে চতুর্মাত্রিক ব্লগ সংকলন একটা কিনলাম। আমি অবশ্য ভেবেছিলাম, যেহেতু আমার একটা লেখা সংকলনে প্রকাশ পেয়েছে, বোধহয় এক কপি ফ্রি পাবো!

কিছুক্ষন সেখানে আড্ডা দিয়ে চলে গেলাম অন্যপ্রকাশ স্টলে। সেখান থেকে লিটল ম্যাগ চত্বরে। দেখা হলো শব্দনীড়ের জাকির ভাইয়ার (ভালোবাসার দেয়াল) সাথে। তিনটি বই কিনলাম, ব্লগারস ফোরাম থেকে প্রকাশিত নীড় গল্পগুচ্ছ, নির্বাচিত বাংলা গদ্য কবিতা আর শব্দতরীর সর্বশেষ সংখ্যা। জাকির ভাইয়া আমাকে নিয়ে আবার অন্যপ্রকাশে গিয়ে সরলরেখা – বক্ররেখা কিনে স্টলের সামনে আমার অটোগ্রাফ চেয়ে বসলেন। আমি খুবই লাজুক ভঙ্গিতে আমার নামটা লিখে দিলাম!

আজ ১১ তারিখেও আমি দেরী করে ফেললাম। মেলায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় ছয়টা। ততক্ষনে “চতুর্মাত্রিক” ব্লগ সংকলনের মোড়ক উন্মোচন শেষ। কিন্তু দেখা হলো অনেকের সাথে। আকাশগঙ্গাকেই প্রথম দেখি, তারপর চোখে পড়ে ফয়সাল রাব্বিকে। পরিচিত হই ফ্রয়েডের অবচেতনার সাথে, ভেবেছিলাম বয়স্ক কেউ, দেখি নওজোয়ান! মেঘ অদিতি আপুর সামনে একুয়া রেজিয়াকে জিজ্ঞেস করছি মেঘ অদিতি আপু কোথায়! চা এবং টা খেতে গিয়ে পরিচয় হলো সাদা কালো এবং ধুসর (সুস্মিতা রেজা খান) এবং ত্রেয়া আপুর সাথে। সাকাধুর কাছ থেকে তার “পেজগি” নিলাম বিশেষ কমিশনে! কখন যে বিলাইদা ওরফে শাওন ভাইয়া এসে হাজির খেয়ালই করিনি!

মেলায় আবার ঢুকে আহমাদ আব্দুল হালিম ভাইকে দেখলাম অনেকগুলো বই হাতে নিয়ে ঘুরছে। নেওয়া হলো “ইরিডেনাস”, মেঘ অদিতি আপুর “মেঘ ডুমুরের ফুল” অটোগ্রাফসহ। অনেকক্ষন ধরে কথা হলো অনীক আন্দালিব আর ঝড়কন্যার সাথে। তারপর কে যে কোথায় একে একে চলে গেলো!

হাটতে হাঁটতে জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশনের সামনে রেজওয়ান তানিম ভাই , লিখন ভাই আর বাবুল হোসাইন ভাইয়ার সাথে দেখা, আবারো আড্ডা। আড্ডা শেষে শিপন ভাইয়ার বইটা কিনতে গিয়ে আবারো ঈশান ভাইয়া আর নাজমুল ভাইয়াকে পেয়ে গেলাম।

শুদ্ধস্বর থেকে “সোনামুখী সুঁইয়ে রুপোলী সুতো” কিনেই আমরা মেলা থেকে বের হয়ে এলাম। শেষ হলো আমার দুই দিনের মেলা ভ্রমন। বইমেলায় আবারো আসতে পারবো আশা করি ১৭ তারিখের পর, ততক্ষণ পর্যন্ত খোদা হাফেজ।

বইমেলা ডায়েরীঃ ০৪/০২/২০১২ (সময় টিভির সাথে আলাপন)

প্রতিবছর একবার, খুব বেশি হলে দুইবার একুশের বইমেলায় যাই। আর এবার বইমেলা শুরু হবার আগের দিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত প্রতিদিন গিয়েছি। মনের টানে, প্রাণের টানে, সরলরেখা – বক্ররেখার টানে।

তিন তারিখ রাতেই অন্যপ্রকাশের কমল ভাইয়া আমাকে ফোন করে বলেছিলো চার তারিখ বিকালে সময় টিভি সরলরেখা – বক্ররেখার লেখক-লেখিকাদের একটি সাক্ষাতকার নিতে চাচ্ছে। কিন্তু ততক্ষণে ফয়সাল আর মানিক চট্টগ্রাম আর সিরাজগঞ্জে পৌঁছে গেছে, নাজমুল ভাইয়া খুলনায় নিজের বাসায় গিয়ে রাতের খাবার খাচ্ছেন আর জুলিয়ান ভাই ঢাকার বাইরে চলে গেছেন। তাই শুধুমাত্র পলাশ, উদরাজী ভাইয়া আর পাপতাড়ুয়া সোহেলকে খবর দিতে পারলাম, এমনকি অপাংক্তেয় আপুকেও জানাতে পারি নি।

আজ মেলা প্রাঙ্গনে গিয়েছিলাম সাড়ে চারটার দিকে, ইতোমধ্যে অন্যপ্রকাশ থেকে দুইবার ফোন দিয়ে জানালো সময় টিভি আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমি মেলায় গিয়ে দেখি, তখনো কেউ আসেনি। পলাশকে ফোন দিলাম, মাত্র দিবানিদ্রা থেকে উঠলো। উদরাজী ভাইয়া তখনো অফিস থেকে বের হোন নি, আমাকে জিজ্ঞেস করলো তাঁর আসার প্রয়োজন আছে কি না! আর সোহেল সেই সময় বনানীর যানজটে! আমি সময় টিভির জৈষ্ঠ্য প্রযোজক কমল সিদ্দিক ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে খুব কষ্টের এক হাসি দিলাম, উনি বললেন আরো আধা ঘন্টা অপেক্ষা করা যেতে পারে।
কিছুক্ষণ পর পলাশের চেহারা দেখা গেলো। আরো বিশ মিনিট অপেক্ষার পর উদরাজী ভাইয়াকে হেলে দুলে আসতে দেখা গেলো, কিন্তু সোহেলের কোন দেখা নেই! অপেক্ষা করতে করতে আমরা যখন সবাই ক্লান্ত, ঠিক হলো সোহেলের কপালে নেই, কী আর করা!

লেখককুঞ্জের সামনে আমাদের সাথে আলাপন শুরু হলো। উদরাজী ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করা হলো সরলরেখার বক্ররেখার শুরু কিভাবে হলো। পলাশ এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে বললো। আর আমাকে বলতে হলো নতুন লেখক হিসেবে বই বের করতে কি কি সমস্যা পোহাতে হয়েছে এবং এর প্রতিকারের উপায় কি। আমাদের আলাপন যখন শেষ, তখন তাকিয়ে দেখি সোহেল এসে গেছে। ততক্ষণে ক্যামেরা অফ! বেচারা সোহেল!

মজার ব্যাপার ঘটলো এরপরে। আমাদের সাক্ষাতকার দেওয়া দেখে লেখককুঞ্জ থেকে এক লেখক বের হয়ে কমল সিদ্দিক ভাইয়ের হাতে তার লেখা বইয়ের একটি কপি দিয়ে তার একটি সাক্ষাতকার নিতে বললো। খুব মজা লাগছিলো টিভি ক্রুদের বিব্রতকর অবস্থা দেখে! লেখক বেচারা শেষ পর্যন্ত সাক্ষাতকার দিতেই পারলো না!

এরপর বাইরে গিয়ে চা খেতে খেতে গীতিকার শেখ রানা ভাইয়ার (ব্লগার নস্টালজিক) সাথে দেখা হলো। বেশ কিছুক্ষণ তার সাথে আড্ডা মেরে মেলায় ঢুকে প্রথমেই গেলাম জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশনে। সেখানে ব্লগার রেজওয়ান তানিমকে পেয়ে গেলাম, নেওয়া হলো তার ‘মৌনমুখর বেলায়’ বইটি। সেখানে আরো দেখা হলো ব্লগার ফালতু (সীমান্ত পথিক) এবং ফেরদৌস হাসানের সাথে। লিটলম্যাগ চত্বরে হলো অসাধারণ আড্ডা।

কিছুক্ষণ পর তাদের কাছ হতে বিদায় নিয়ে একা একা হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করে আমার নাম ধরে কেউ একজন ডাক দেওয়াতে সম্বিত ফিরে পেলাম। তাকিয়ে দেখি আমি জাগৃতি প্রকাশনীর সামনে দাঁড়িয়ে, আমাকে ভিতর থেকে ডাকছে জলি আপু, প্রকাশকের স্ত্রী, আমাদের মেডিকেলের বড়ো আপু। কথা বলতে বলতে চিন্তা করছিলাম এখান থেকে কোন বই কেনা যায়। হঠাৎই চোখের সামনে দেখতে পেলাম আব্দুর রাজ্জাক শিপন ভাইয়ার গতবছরের উপন্যাস ‘চন্দ্রাবতীর চোখে কাজল রং’, নিয়ে নিতে ভুল হলো না।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে আটটা বেজে গেছে। আমার সাথে পাপতাড়ুয়ার যাওয়ার কথা, ওকে ফোন দিতে গিয়ে দেখি মোবাইলের চার্জ শেষ, কিছুক্ষণ মেলার এ প্রান্তে ও প্রান্তে ওকে খুঁজে বেড়ালাম, কিন্তু পেলাম না।

বিশাল এক দিন গেলো আজ। বিদায় নেবার আগে জানিয়ে যাচ্ছি সময় টিভিতে আমাদের সাক্ষাতকার প্রচারিত হবে বুধবার (০৮/০২/২০১২) রাত সাড়ে আটটায় এবং পুনর্প্রচার করবে বৃহস্পতিবার (০৯/০২/২০১২) দুপুর সাড়ে বারোটায়। সবাইকে দেখার আমন্ত্রণ রইলো।