জন্মদিনের উপহার

২ ডিসেম্বর। সেদিনও ছিলো রবিবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে অধ্যায়নরত এক যুবক তাঁর হোস্টেলের রুমে অস্থিরচিত্তে পায়চারি করছে। কিছুক্ষণ আগে খবর এসেছে তাঁর প্রথম সন্তান এই অদ্ভুত সুন্দর পৃথিবীর মুখ দেখেছে। সন্তানের জন্ম হয়েছে তাঁর নানা বাড়িতে, সে জায়গার নাম পটুয়াখালী। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি জেলা শহর।

যুবকটি অস্থির হয়ে আছে তাঁর সন্তানের মুখ দেখার জন্য। কিন্তু সেই সময়ে ঢাকা থেকে পটুয়াখালী যাবার জন্য তাঁর হাতে কোনো টাকা কড়ি নেই। না যেতে পারার অক্ষম আক্রোশে দাঁত দিয়ে নখ কাটছে আর রুমের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাচ্ছে। এমন সময় তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর আগমন। বন্ধুটি সব শুনে পকেট থেকে এক বান্ডিল টাকা বের করে দিয়ে বললেন, “যা, সন্তানকে দেখে আয়!” বিস্ময়ে অভিভূত সেই যুবকটি বলে উঠলো, “দোস্ত! আমার ছেলের নাম রাখলাম তোর নামে!”

বন্ধুটির নাম ছিলো নিয়াজ রহিম, বর্তমানে রহিম আফরোজের ডিরেক্টর এবং আগোড়া চেইন সুপার স্টোরের চেয়ারম্যান। আর সেই সদ্য প্রসূত সন্তানের নামও রাখা হলো- নিয়াজ, নিয়াজ মাওলা- ব্লগিং জগতে যে ‘ডাক্তারের রোজনামচা’ নামে পরিচিত।

আজ ২ ডিসেম্বর। আজও রবিবার। শুভ জন্মদিন নিয়াজ, শুভ জন্মদিন ডাক্তারের রোজনামচা।

(১)

অবাক হচ্ছেন! নিজেকে নিজে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি বলে! তবে জেনে রাখুন, গতকাল রাত বারোটার পর থেকে মোবাইলের মেসেজ বক্সে, ফেসবুকের ইনবক্সে, ওয়ালে, এমনকি ব্লগের ক্ষুদে স্ট্যাটাসে এবং পোস্টে আমি সবার কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, মনে হয়েছে এতো এতো মানুষ যাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে, তাকে যদি আমি শুভেচ্ছা না জানাই তাহলে খুব অশোভন দেখাবে!

(২)

এবারের জন্মদিনটা আমার কাছে একটু অন্যরকম। একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমাকে নিতে হয়েছে ঠিক এই মুহুর্তে। সবাই জানেন আমি ডাক্তার, নিউরোসার্জারীর ডাক্তার। মানুষের মাথা কাটাই আমার কাজ। ইন্টার্নশিপ শেষ করার পর থেকেই আমার চাকরী এই নিউরোসার্জারী বিভাগেই। সেই থেকে এই- দীর্ঘ প্রায় সাত বছর কীভাবে যেনো নিউরোসার্জারীতেই কাটিয়ে দিলাম। মেডিকেল অফিসার থেকে শুরু করে আজ রেজিষ্ট্রার পর্যন্ত হয়ে গেছি।

এক সপ্তাহ আগে আমি এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আমাকে আর নিউরোসার্জারীর ডাক্তার বলা যাবে না। ৩০ নভেম্বর থেকে আমি অফিসিয়ালী নিউরোসার্জারীর সাথে আর জড়িত নেই। কেনো, কি কারণে এই সিদ্ধান্ত সেই ব্যক্তিগত পাঁচালীতে আমি যাবো না, শুধু বলি- একজন রিসার্চার হিসেবে আমি এখন নিজেকে দেখতে চাই। আর তাই আইসিডিডিআর,বি – এর ভ্যাক্সিনেশন প্রজেক্টে আমি যোগদান করেছি। আমার জন্মদিনের দিন আমার ক্যারিয়ারেরও পুনর্জন্ম হলো বৈ কি!

young_researcher_of_the_year_2011_1_standard

(৩)

ফেসবুকে সুরঞ্জনা আপু কমেন্ট করেছেন আমার সাথে দেখা হলে একটা মাইরও মাটিতে পরবে না! সরি আপু, খুব তাড়াহুড়া করেই সিলেট থেকে ঢাকায় চলে আসতে হয়েছে। আপনার সাথে দেখা হলো না! তবে এবার সিলেটে যখন বেড়াতে যাবো- আপনার বাসাতেই আস্তানা গাড়বো ঠিক করেছি।

শব্দপুঞ্জ অনুরোধ করেছে অন্তত একদিন দেওয়ালটা খোলার জন্য- সিরিয়াসলি চিন্তা ভাবনা করছি!

আজাদ কাশ্মীর ভাইয়ার লিঙ্ক ধরে এগিয়ে আমি অভিভূত। উদরাজী ভাইয়া তাঁর পোস্টের শেষে যে বাক্যটি লিখেছেন – আমি লজ্জায় লাল হয়ে গেছি!

আব্দুল্লাহ আল মামুন, রাজ আগারওয়াল, পবিত্র রঞ্জন সাহা, ডাঃ অরূপ, অপাংক্তেয় আপু, হাসান মামা, হযরত বিনয় ভদ্র ভাইয়া, ডাঃ তমাল, রুবেল আহমেদ কুয়াশা, ডাঃ আদনীন মৌরিন, ডাঃ মনোয়ার হোসেন, মমিন মামা, অজানা পথিক, মাসুম আহমেদ ভাইয়া, মোহাম্মদ করিম, ডাঃ অনির্বান ঘোষ, ডঃ রানা চৌধুরী স্যার, রাজশ্রী চাকমা, শামীম কাওসার বাঁধন, ডাঃ তারজিয়া, আহাদ ভাইয়া, ডাঃ রাহাত সারোয়ার চৌধুরী, সাদি ফাইয়াজ, ডাঃ সাদেকুর রোমেল, খালিদ মোহাম্মদ বিন আতিক, সৈয়দ মোহাইমিনুর রাহাত, অমিতাভ নুর, অনিন্দ্য দাস অনিক, নাজমুল হাসান হীরক, হাসান আলী রুমান, আলীম আল রাজি, সাইফ আলম জিসান, আশিক, আরিফ, ডাঃ মুদাসসির, সেলিম ভাইয়া, ডাঃ সোহেলী সাত্তার আপু, জুনাপু, আযহার উল কারিম ভাই, জ ই মানিক, আকাশগঙ্গা পলাশ, জয় কবির ভাইয়া, রোদেলা নীল, সামসির মোঃ আব্দুল আজিজ ভাইয়া, মোঃ মারুফ, নায়লা আজিজ মিতা আপু, এন জি টুটুল, জাহাঙ্গীর আলম ভাইয়া, সাইফ সাইমুম, ডাঃ সাবিনা ইয়াসমিন, ডাঃ অর্নব মাহমুদ, মামুন মোর্শেদ রাহাত, সালেকীন শাকিল, রাজীব রাসেল ভাইয়া, জাকির হোসেন ভাইয়া, আমিনুল করিম শাহাব, সেহেলি মোস্তফা, ডাঃ মাসুম খান, খায়রুল কবির মামা, প্রিথ্বিশ রায়, মাহমুদা সোনিয়া আপু। মোঃ মাশফিকুর রহমান, আমিন শিমুল, লুনা রুশদী আপু, জলরং আপু, বৃশ্চিক, মেঘ অদিতি আপু, নিশাচর বাহা উদ্দিন, নয়ন, নিঃসঙ্গ পৃথিবী, নুশেরা আপু, মাতরিয়শকা ভাইয়া, ফকির আব্দুল মালেক ভাইয়া, ছায়েদা আলী আপু, আফরোজা হক আপু, ছেলেবেলা, সাইক্লোন, গঙ্গা, নাইফা চৌধুরী অনামিকা আপুসহ আরো অনেকেই যারা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন- তাঁদের প্রত্যেককেই অসংখ্য ধন্যবাদ।

thank-you-smiley

(৪)

আজ এই কিছুক্ষণ আগে আমার জন্মদিনের উপহার পেয়েছি- বাংলাদেশ ক্রিকেট টীমের পক্ষ থেকে।

অভিনন্দন বাংলার দামাল ছেলেদের। 

Congratulation

One thought on “জন্মদিনের উপহার

Leave a comment